ইউটিউব দেখে প্রশিক্ষণ দেন বাবা, তিন বছর বয়সেই পুরোদস্তুর ক্রিকেটার ছেলে!

৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৩ অপরাহ্ণ ক্রীড়া ডেস্ক
ইউটিউব দেখে প্রশিক্ষণ দেন বাবা, তিন বছর বয়সেই পুরোদস্তুর ক্রিকেটার ছেলে!

বয়স সবে সাড়ে তিন বছর। এই বয়সে যেখানে শিশুরা দুনিয়াজোড়া দুষ্টুমিতে মেতে থাকে, সেখানে ছোট্ট ঈসার ধ্যানজ্ঞান যেন কেবল ক্রিকেট। বাবার কোলে চড়ে প্রতিদিন মাঠে যায়। হেলমেট, প্যাড, গ্লাভস ও পোশাকে যেন পুরোদস্তুর এক পেশাদার ক্রিকেটারের ছাপ। বয়স কম হলেও ব্যাট-বলে তার পরিপক্কতা দেখে যে কেউ অবাক হতে বাধ্য—কখনো ব্যাট হাতে ছক্কা হাঁকাচ্ছে, আবার কখনো বল হাতে দেখাচ্ছে দুর্দান্ত দক্ষতা।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট্ট ক্রিকেটার মোহাম্মদ ঈসার ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ দুই বছর বয়স থেকেই। সন্তানের এমন আগ্রহ দেখে তার বাবা তাকে ক্রিকেট অনুশীলন করাতে থাকেন নিজেই। এখন তার খেলা দেখে বিস্মিত স্থানীয়রা।


কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়ন পরিষদ মাঠ। এখানেই ছোট্র শিশু মোহাম্মদ ঈসা তার বাবার সাথে ক্রিকেট অনুশীলন করে থাকেন। বৃষ্টি বাদলের দিন পরিষদের বারান্দায় চলে অনুশীলন। সাড়ে তিন বছরেরে ঈসা ইতোমধ্যে রপ্ত করেছেন ব্যাটিংয়ের কলা কৌশল। ব্যাট হাতে কখনো হাঁকান ছক্কা আবার কখনো মারেন চার। শুধু ব্যাটিং নয় সমানতালে করতে পারেন বলও। এরই মধ্যে লেগ স্পিনের ঘূর্ণি দেখাতে শুরু করেছেন। তার খেলা দেখে আনন্দিত পথচারী থেকে এলাকাবাসী সবাই। ঈসা মাঠে নামলেই ভিড় বেড়ে যায় মাঠের চারপাশে। এলাকাবাসীর আশা ঈসা একদিন বড় ক্রিকেটার হবে।

ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান নিজে কখনো ক্রিকেট না খেললেও ছেলের আগ্রহ দেখে তাকে নিয়মিত অনুশীলন করাচ্ছেন। সামান্য আয়ের মধ্যে থেকেই ক্রিকেট সামগ্রী কিনে দিচ্ছেন তিনি। তার ইচ্ছা ছেলে বড় হয়ে নামকরা ক্রিকেটার হবে। ঈসার বাবা আমিনুর রহমান বলেন,সন্তানের খেলার প্রতি আগ্রহ থেকেই ইউটিউব দেখে ব্যবসার ফাঁকে সকাল-বিকাল প্রশিক্ষণ দিচ্ছি ছেলেকে। আমার সন্তানকে জাতীয় দলের খেলোয়াড় বানানোর জন্য আমি পরিশ্রম করে যাচ্ছি। সে যেন দেশের হয়ে সুনাম বয়ে আনতে পারে। আর জেলা ক্রীড়া অফিসের এ সহযোগিতা পেয়েছি। এতে আমাকে আরও অনুপ্রেরণা যোগাবে।


স্থানীয় আলামিন মিয়া বলেন, ঈসার খেলা দেখলাম শিশুটি খুব ভালো খেলেন। শিশুটি খেলার সুযোগ পেলে জাতীয় দলে খেলতে পারবে। এতে এলাকার সুনাম অর্জন করবে। কেদার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াজিদুল কবির রাসেদ বলেন ,ছোট্ট এই শিশুর ক্রীড়া নৈপুন্যকে বাস্তবে রূপ দিতে ভবিষ্যতে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ওই এলাকায় একটি মিনি স্টেডিয়াম গড়ে তুলতে পারলে ঘরে ঘরে ঈসার মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরি হবে।

জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মো. আকরাম হোসাইন জানান,সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিভাবান শিশু ঈসার খেলা আমার নজর কেড়েছে। সে একজন সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়। তাকে ক্রিকেট কোচের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে পারলে অনেক ভালো করবে বলে আশা করি। এসব তৃণমূল পর্যায়ের খেলোয়াড়দের পাশে জেলা ক্রীড়া অফিস সবসময় থাকবে। তিনি আরও জানান, বিকেএসপিতে ঈসার ভর্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

← প্রচ্ছদ